নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ০৯ মে, ২০২১
সরকার বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করেছিলো। সরকারের ভেতরে এক ধরনের মমত্ববোধও তৈরি হয়েছিলো এবং এক ধরনের অস্বস্তিবোধও তৈরি হয়েছিলো। যদি শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হয় তাহলে এর দ্বায় দায়িত্ব সরকারের ওপরে বর্তাবে এরকম একটি শঙ্কাও তৈরি হয়েছিলো। এক দিক থেকে মানবিক প্রধানমন্ত্রী, অন্যদিক থেকে খালেদা জিয়ার কিছু হয়ে গেলে এর দ্বায় দায়িত্ব সরকারের ওপরে বর্তাবে এরকম একটি শঙ্কা।
এই দুইয়ের সমন্বয়েই নিখুত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি এবং চারদিকে চোখ-কান খোলা রাখার কারণেই নিখুত পরিকল্পনাটি ভেস্তে গেলো। নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ ছিলো এরকম যে বেগম খালেদা জিয়াকে অসুস্থ সাজানো হবে এবং অসুস্থ সাজিয়ে একটি নাটক তৈরি করা হবে এই নাটকের প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করা হবে। সরকার তখন ভীত থাকবে, খালেদা জিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবে এরকম অবস্থায় সহজে আবেদনটি গৃহীত হবে এবং খালেদা জিয়া লন্ডনে চলে আসবেন। লন্ডনে চলে আসার পর বিএনপি এবং তারেক জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে আসল আন্দোলন শুরু করবেন। এই পরিকল্পনার সবকিছুই ঠিকঠাকভাবেই চলছিলো।
বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রথম তার সিটিস্ক্যান করান তখন বোঝা যাচ্ছিলো যে তার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এবং তার সামান্য ফুসফুসে সংক্রমণ আছে তা একটা সময় ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এর পরপরই লন্ডন থেকে বার্তা এলো এবং বলা হলো যে এই সুযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে আসতে হবে, তাকে অসুস্থ বানাতে হবে। তড়িঘড়ি করে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো এভারকেয়ার হাসপাতালের কেবিনে এবং সেখান থেকে তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হলো। এটি যে একটা সাজানো নাটক ছিলো তার প্রমাণ পাওয়া যায় এখন। কোনো চিকিৎসকই তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সঠিক তথ্য দিচ্ছিলেন না, স্থিতিশীল, অবস্থা অপরিবর্তি ইত্যাদি বিভ্রাুন্তিকর তথ্য দিয়ে একটি ধুম্রজাল তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিলো। এ ছাড়া খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে রেখেই শামীম ইস্কান্দার দৌঁড়ে ছুটে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায়, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে প্রেরণ করা হবে এই আবেদন নিয়ে। বাংলাদেশের অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিদেশে যান নাই বা বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেয়া সম্ভব হয়নি। যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান, অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যানের স্ত্রীসহ একাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েও বিদেশ যাওয়া সম্ভব হয়নি। সেখানে বেগম খালেদা জিয়া সিসিইউতে থাকা অবস্থায় ১০ ঘন্টা জার্নি করে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে এমন ভাবনায় মানুষের খটকা লাগে।
আবেদনটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন। আইনমন্ত্রী বলেন যে এটা নির্বাহী আদেশেই সম্ভব এবং সরকার যখন নির্বাহী আদেশ দেবেন তখন সরকারের নির্দেশেই বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এভারকেয়ার হাসাপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা যায় যে বেগম খালেদা জিয়া আসলে সুস্থ আছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এই মূহুর্তে তার কোনো ধরনের শারীরিক জটিলতা নেই এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছিলো সেটার বাস্তবে কোনো ভিত্তি নেই। এখানে সরকারের টনক নড়ে এবং এভারকেয়ার হাসপাতালের এই তথ্য পাওয়ার পর সরকার বুঝতে পারে যে পুরো ব্যাপারটি একটি নিলনকশা এবং নিখুঁত ছকে সাজানো ছিলো। আর একটু হলেই হয়তো খালেদা জিয়া পাড়ি দিতেন বিদেশে এবং তার পরই দেখা যেত তার ও তারেকের আসল মূর্তি। তবে সরকারের শেষ মূহুর্তের বুদ্ধিদিপ্ততায় সেই উদ্যোগটি ভেস্তে গেলো।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।